আসলে আমরা ইন্টারনেট-এর যে অংশটুকু ব্যবহার করি, তা সমগ্র ইন্টারনেটের মাত্র ৫ শতাংশ। আর বাকিটাজুড়ে রয়েছে ডার্ক ওয়েব ও ডিপ ওয়েব-এর জাল। এগুলো আমরা সাধারণত ব্যবহার করতে পারি না, দরকার হয় বিশেষ ধরনের সফ্টওয়্যার, কনফিগারেশন, অথেন্টিসিটি। আমরা মাত্র যে ৫ শতাংশ ব্যবহার করি, তার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ফ্রডুলেন্ট এবং অসুরক্ষিত সাইট। সেখানে আপনি ভুলবশত প্রবেশ করলে প্রতারিত হতে পারেন। কী কী পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনার ইন্টারনেট এক্কেবারে সুরক্ষিত থাকতে পারে, সেই সব তথ্যই জেনে নিন।

 

১) ডিভাইসের প্রাইভেসি সেটিংস অন রাখুন

যে কোনও অসাধু সাইট আপনার ডিভাইসের সমস্ত তথ্য জানতে চায় তাদের মার্কেটিং পলিসি বা বিজ্ঞাপন চালানোর জন্য। সে ক্ষেত্রে আপনাকে তৎপর হতে হবে, যাতে প্রতারকের খপ্পরে না পড়েন। আপনার ডিভাইসের সমস্ত প্রাইভেসি সেটিংস অন করে রাখতে হবে, যাতে যে কোনও সোর্স আপনার ল্যাপটপ বা মোবাইলের গোপন তথ্য অ্যাক্সেস করতে না পারে। সাধারণত সমস্ত ডিভাইসেই এমনতর সেটিংস থাকে।

২) সেফ ব্রাউজ়িং

জেনেশুনে যেমন আপনি বিপজ্জনক রাস্তায় পা বাড়াবেন না, তেমনই আবার না জেনেশুনে কখনওই কোনও সন্দেহজনক বা অজানা সাইটে সার্ফিং করবেন না। সাইবার জালিয়াতরা ঢের বোঝে যে, আম আদমি ঘুরেফিরে অফারের লোভে বা লোভনীয় বিজ্ঞাপন দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে সেই সব সাইটে ঢুকে পড়েন। তাই টোপ আপনার জন্য তৈরিই থাকে, পাতা থাকে ফাঁদও, আর সেই ফাঁদে পা দিলে মুহূর্তে সব শেষ হয়ে যেতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে পারে প্রতারকরা, এমনকি আপনার ডিভাইসে ভাইরাস পর্যন্ত ঢুকিয়ে দিতে পারে তারা।

৩) শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন

ইন্টারনেটে বিভিন্ন সাইটে যেখানে আপনার অ্যাকাউন্ট রয়েছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল, এমনকি ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। পাসওয়ার্ড বলতে যেগুলি প্রতারকের কাছে অনুমান করা সহজ, সেগুলি এড়িয়ে চলুন। যেমন, আপনার ফোন নম্বর। কখনও ফোন নম্বর পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না। চেষ্টা করুন, কিপ্যাডের বিভিন্ন ক্যারেক্টারের সংমিশ্রণে একটি জটিল, শক্তিশালী এবং ভিন্ন প্রোফাইলের বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এর ফলে আদতে আপনার অনলাইন প্রোফাইলগুলি আরও সুরক্ষিত থাকবে।

৪) সুরক্ষিত ওয়াই-ফাই বা ভিপিএন নেটওয়ার্ক

আপনার ডিভাইস যদি কোনও ওয়াই-ফাই বা ভিপিএন-এর সঙ্গে কানেক্টেড থাকে, তাহলে সেই নেটওয়ার্ক অথেন্টিক কি না, একবার যাচাই করে নিন। কারণ, বেশ কিছু লোকাল বা প্রাইভেট নেটওয়ার্ক একটা নির্দিষ্ট এন্ডপয়েন্টের বাইরে গিয়ে আউটসাইট নেটওয়ার্ক মেশে। আর তখন আপনার ইন্টারনেটের সব তথ্য খুব সহজেই বিনিময় হতে পারে কিংবা ডিভাসে ‘ওয়ার্ম’ও ঢুকতে পারে।

৫) কী ডাউনলোড করছেন, দেখে নিচ্ছেন তো?

ক্রোম, ব্রাউজ়ার থেকে যা ডাউনলোড করছেন, তা ম্যালওয়্যারযুক্ত নয় তো? সেই দিকটা কিন্তু অতি অবশ্যই আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। যদি তা হয়, তাহলে আপনার ডিভাইসে ডাউনলোড হয়ে যাওয়া সেই ম্যালওয়্যার ফাইল থেকে খুব সহজেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি নিমেষে আপনার গোপন তথ্য পর্যন্ত চুরি হয়ে যেতে পারে।

৬) ডিভাইসে অ্যান্টিভাইরাস আপডেটেড রাখুন

আপনার ডিভাইসে অ্যান্টিভাইরাস ফাংশন সবসময় অ্যাক্টিভ করে রাখুন, রাখুন আপডেটেডও। অ্যান্টিভাইরাস আপনার ইন্টারনেট সুরক্ষাকে জোরদার করে, ম্যালওয়্যার ডিটেক্ট এবং রিমুভও করতে পারে। এছাড়াও আপনার ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম যে যে অ্যাপ্লিকেশন আপডেট করার সাজেশন দেবে, সেগুলো নিয়মিত আপডেটেড রাখুন। অপারেটিং সিস্টেম খুব ভাল ভাবে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে।

মনে রাখবেন, সুরক্ষিত ইন্টারনেট মানে সুরক্ষিত তথ্য আর সুরক্ষিত তথ্য মানেই সুরক্ষিত গোপনীয়তা। তাই সতর্ক থাকুন এবং সুরক্ষিতও থাকুন।